বিশ্বের মধ্যে সর্বাধিক জনবহুল দেশ ভারত। তাই ভারতে নিত্যদিন মানুষের যাতায়াত করতে হয় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে। আর বর্তমান সময়ে ভারতীয় রেল আমাদের দেশের গণপরিবহণ ব্যবস্থায় এক অন্যতম ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রায় প্রতিদিনই দেশজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ ট্রেনের মাধ্যমে পৌঁছে যান নির্দিষ্ট গন্তব্যে। যাত্রী পরিবহন থেকে শুরু করে দৈর্ঘতার নিরিখে ভারতীয় রেল বিশ্বে চতুর্থ স্থান দখল করে। সুদূর জম্মু থেকে কন্যাককুমারী, আসাম থেকে রাজস্থান- সর্বত্র বিছিয়ে রয়েছে রেলের যোগাযোগ। আর এই বিশাল দেশে রেল ব্যবস্থা চালু রয়েছে বছরের সবকটি দিনই।
রেলকে অন্য আঙ্গিকে দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে যেমন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো সেমি-হাইস্পিড ট্রেন চালু করা হয়েছে, তেমনই আবার ট্রেনের ট্র্যাকগুলিকে নবরূপে গঠন করা হচ্ছে কোনরূপ দুর্ঘটনা এড়াতে। তবে এর পাশাপাশি, দেশের স্টেশনগুলিকে সাজিয়ে তুলতে অমৃত ভারত স্কিম চালু হচ্ছে গোটা দেশে। ভারতীয় রেলের এই প্রকল্পের মাধ্যমে আবার নতুন রেল রুট নির্মাণের কাজও চলছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল কৃষ্ণনগর-আমঘাটা লাইন। এই লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হলে আগামী দিনে নবদ্বীপধামকে কৃষ্ণনগরকে জুড়ে দেওয়া সম্ভব হবে। এমনটা হলে নদীয়া জেলার অনেক মানুষ উপকৃত হবেন।
উল্লেখ্য, এই কৃষ্ণনগর-আমঘাটা লাইনে আগেই ট্রেন চলাচল করত। শান্তিপুর-নবদ্বীপঘাট (ভায়া কৃষ্ণনগর) রুটে এই ট্রেন চলতো আগে। তবে আগে এই রুট ছিল ন্যারো-গেজ লাইন। সেই সুতেই ট্রেন চলাচল করতো। তবে ২০১০ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই লাইনকে ব্রড-গেজ লাইনে রূপান্তরিত করার ঘোষণা করেন। সেই মতো কাজ শুরু হয়। এই লাইনটিকে ব্রড-গেজ লাইনে রূপান্তরিত করার তোড়জোড় দেখা যায় সেই সময়। তবে কৃষ্ণনগর থেকে আমঘাটা পর্যন্ত ৮.৫ কিলোমিটার রুটের কাজ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু জমি জটের কারণে বাকি কাজ আটকে যায়।
তবে এই কাজ লোকসভা ভোটের আগে সম্পন্ন করার উদ্যোগ নিয়েছিল রেল। সেই মোতাবেক তোড়জোড় শুরু করে রেল। মঙ্গলবার কৃষ্ণনগর থেকে আমঘাটা অবধি ৮.৫ কিলোমিটার লাইন পরিদর্শনে আসেন ইস্টার্ন সার্কেলের কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি শুভময় মিত্র। তিনি এই লাইনের সবটা খুঁটিয়ে দেখেন। তার একদিন পরেই তিনি সবুজ সংকেত দেন। বুধবার এই অংশে ঘন্টায় ৭৫ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চালিয়ে ট্রায়াল রান সম্পন্ন করা হয়। তবে কবে থেকে এই রুটে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হবে, তা জানা যায়নি।