ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমারেখা থাকলেও দুই দেশের যাতায়াত ব্যবস্থা চালু রয়েছে। তার অন্যতম কারণ হল দুই দেশের মানুষের নানা কাজের সুবিধা। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ কলকাতায় আসেন চিকিৎসার জন্য। এছাড়াও ব্যবসার জন্য কাঁটাতার পেরিয়ে বহু মানুষকে যাতায়াত করতে হয়। মূলত, বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় আসা মানুষের সংখ্যাটা সর্বাধিক। কাজেই গঙ্গাপার ও পদ্মাপারের দুই বাংলা আলাদা হলেও যেন আবদ্ধ হয়ে রয়ে গেছে একটি মৈত্রীর সুতোর মাধ্যমে।
বর্তমানে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াতের জন্য তিনটি ট্রেন চালু রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম ট্রেন হল মৈত্রী এক্সপ্রেস। এই ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছেড়ে কলকাতা আসে এবং কলকাতা থেকে ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এছাড়াও রয়েছে বন্ধন এক্সপ্রেস, যেটি খুলনা থেকে কলকাতা রুটে চলাচল করে। এছাড়াও রয়েছে মিতালি এক্সপ্রেস। এই ট্রেন হলদিবাড়ি এবং চিলাহাটি রুট দিয়ে নিউ জলপাইগুড়ি-ঢাকা রুটকে সম্পন্ন করে। এই ট্রেনটি আবার সপ্তাহে দুদিন চলে।
তবে ভারত থেকে বাংলাদেশ অবধি ট্রেন চললেও ভারতের এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ হয়ে সেই রুট করা যায়নি। কথা বলছি পশ্চিমবঙ্গ থেকে আগরতলা রুটের। এই রুটে যেসব ট্রেন চলে সেইসব ট্রেন শিয়ালদহ থেকে ছাড়ে এবং সেটি ২৪ ঘন্টা পর আগরতলায় পৌঁছায়। ট্রেনটিকে গুয়াহাটি হয়ে যেতে হয়। অর্থাৎ শিয়ালদহ থেকে আগরতলা যেতে ট্রেনটিকে পার করতে হয় হাফলং, নিউ করিমগঞ্জ, ধর্মনগর প্রভৃতি এলাকা। ফলস্বরূপ কাছাকাছি হওয়া সত্ত্বেও ঘুরপথে যাওয়ার জন্য অনেকটা বাড়তি সময় লেগে যায় এই ট্রেনে।
তবে এবার থেকে এই সময়ের সমস্যার সমাধান ঘটাবে বাংলাদেশে তৈরি পদ্মা সেতু। জানা গেছে, এবার থেকে শিয়ালদহ থেকে আগরতলা আর ঘুরপথে পৌঁছাতে হবেনা। এর জন্য বাংলাদেশে হয়ে এই ট্রেন যাত্রাপথ শুরু করবে। আর আগামী জুন মাস থেকেই এই নতুন রুট চালু হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, দুই দেশের সরকার একছত্রে এই কাজ করছে। এর ফলে যাত্রীদের অনেকটা সময় বাঁচবে। কারণ আগরতলা থেকে বাংলাদেশের আখাউর হয়ে ঢাকা পৌঁছানো যাবে মাত্র মাত্র দু ঘন্টায়, এদিকে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোরের উপর দিয়ে শিয়ালদা পৌঁছাতে সময় লাগবে মাত্র তিন থেকে চার ঘন্টা। অর্থাৎ, ২৪ ঘন্টার যাত্রাপথ সম্পন্ন হবে মাত্র ৬ ঘন্টায়।