বিগত কয়েকদশক ধরে ভারতের কৃষি ব্যবস্থার হল হয়েছিল বেহাল। সবুজ বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে একটু একটু করে নড়বড়ে হয়েছিল কৃষিপ্রধান এই দেশের চাষবাসের ভীত। সেই কারণে কৃষিকাজ ছেড়ে অন্যান্য কাজের দিকে পা বাড়িয়েছিলেন অনেকেই। তবে সম্প্রতি, কয়েকবছর আগে থেকেই দেশের এই অন্নদাতাদের জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এতে যেমন কৃষকদের অর্থ সাহায্যের বিষয়টিও দেখা গেছে, তেমনই কৃষকদের দেখানো হচ্ছে উন্নত প্রজাতির সব সবজির চাষবাসের পদ্ধতি। আর এবার চাষের এমন পদ্ধতি এল, তা দেখে কৃষকদের আনন্দের ঠিকানা থাকবে না।
ধান হোক বা গম কিংবা অন্য কোনো শস্য বা সবজি, যেকোনো চাষের ক্ষেত্রে কীটপতঙ্গের অত্যাচার ব্যাপকভাবে দেখা যায়। তাই বছরের যে সময়েই কোনো চাষ করা হোক না কেন, সেইসব গাছে কীটনাশক প্রয়োগ করা জরুরি। তা না করলে পোকায় নষ্ট করে দেয় সবজি। আর এখন বাংলার কৃষকদের কাছে কীটনাশক প্রয়োগের একটি পুরানো উপায় রয়েছে। যদিও পঞ্জাব ও হরিয়ানার মতো রাজ্যের কৃষকরা এখন অনেক উন্নত পদ্ধতি ব্যবহার করেন। তবে এবার রাজ্যের কৃষকদের জন্যও উপলব্ধ হবে সেইসব পরিষেবা।
এবার থেকে কীটনাশক প্রয়োগ ক্ষেত্রে আর পিঠে ভারী কন্টেনার নিয়ে ঘুরতে হবে চাষীদের। কারণ এবার থেকে কীটনাশক প্রয়োগ করা যাবে আকাশ থেকেই। শুনে অবাক হচ্ছেন তো! আদতেই এটা সম্ভব ড্রোনের মাধ্যমে। ইতিমধ্যে রাজ্যের কৃষি দফতর রাজ্যে ড্রোনের মাধ্যমে কীটনাশক প্রয়োগ করেছে পরীক্ষামূলক ভাবে। সম্প্রতি, উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ ব্লকের বড়ুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কৃষকদের এই পদ্ধতি হাতেকলমে শেখানো হয়। জানা গেছে, এর মাধ্যমে সহজেই চাষের জমিতে কীটনাশক ও সার প্রয়োগ করা যাবে।
জানা গেছে, এই ড্রোনের ক্যাপাসিটি হল ১০ লিটার। অর্থাৎ, জল মিশিয়ে ১০ লিটার কীটনাশক দ্রবণ ধরবে এই ড্রোনে। এই ১০ লিটার জলের সঙ্গে ৩০০ মিলিলিটার কীটনাশক মেশাতে হবে। এবার এই ড্রোন উড়িয়ে দিলেই এক একর জমিতে স্প্রে করা যাবে। জানা গেছে, ১০ ফুট উচ্চতায় উড়তে উড়তে এই ড্রোন মাত্র ৬ মিনিটে এই কাজ সম্পন্ন করতে পারবে। এই ধরণের দাম রয়েছে ৮ লক্ষ টাকা। কৃষকরা কিনলে এর উপর সরকারি ভর্তুকি পাবেন। আর এই বিশেষ ব্যবস্থা রাজ্যের কৃষি ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনবে বলে মনে করা হচ্ছে।