শুক্রবার দিনটি কলকাতার বুকে এক ঐতিহাসিক দিন হয়ে রয়ে যাবে। কারণ এইদিন গঙ্গার নীচে সফর শুরু করলো মেট্রো রেল। অর্থাৎ, পাতালরেল এখন আর শুধু মাটির নিচের রেল পরিবহন ব্যবস্থা রইল না, এবার থেকে পাতালরেল ছুটবে জলের নিচেও। আর দেশে প্রথম এমন রেল ব্যবস্থা চালু হল। তাই উদ্বোধনের এক সপ্তাহ পেরোতে না পেরোতেই যাত্রীবাহী মেট্রো ছুটলো গঙ্গাবক্ষের নীচে অবস্থিত সুড়ঙ্গের ভেতর দিয়ে। তাই এদিন গঙ্গা নদীর নীচে সফর করলেন শয়ে শয়ে যাত্রী।হাওড়া থেকে এসপ্ল্যানেড রুটে চালু মেট্রোযাত্রা। নদীর নীচে নীল আলোয় ছুটলো যাত্রীবাহী ট্রেন।
এদিন হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেডগামী সকাল সাতটার প্রথম মেট্রোতেই দেখা যায় থিকথিকে ভিড়। অফিসযাত্রীরা তো ছিলেন, তবে তারা ছাড়াও এই ভোরের ভিড়ে ছিলেন অনেক উৎসাহী জনতা। তারা শুধুমাত্র গঙ্গার নীচে দিয়ে চলা প্রথম মেট্রোর যাত্রী হতে এসেছিলেন। কেউ এসেছিলেন কলকাতা থেকে, কেউ হাওড়া থেকে, কেউ আবার রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে। কেউ কেউ আবার এসেছিলেন পড়শি রাজ্য বিহার থেকেও। টিকিট কাটতে রাত দু’টো থেকে হাওড়া ময়দান মেট্রো স্টেশন চত্বরে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন উৎসাহী জনতা। তাদের সবাইকে গোলাপ দিয়ে ওয়েলকাম করে মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
এই মেট্রো সফর তো বেশ আরামদায়ক। কিন্তু মেট্রো সফরকালীন সময়ে যদি দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোনো দুর্ঘটনে ঘটে, তাহলে কিভাবে বেঁচে ফিরবেন? এটাও কিন্তু জরনে রাখা দরকার। সেক্ষেত্রে আপদকালীন সময়ের জন্য বুশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থা করেছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সেক্ষেত্রে কিছু বায়ু চলাচল খাদ রাখা হয়েছে। হাওড়া স্টেশন থেকে এস্প্ল্যানেডের মাখে স্ট্র্যান্ড রোডের রয়েছে একটি বায়ুচলাচল খাদ। সেখান থেকে বেরোতে গেলে যাত্রীদের ২৭৩টি সিঁড়ি ভেঙে ১২ তলা পর্যন্ত উঠতে হবে। এই খাদ্যের মধ্যে যেকোনো ধরণের সুরক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, মেট্রোরেলের নিয়মানুযায়ী মেট্রো টানেলের প্রতি ৭৬২ মিটারের মধ্যে একটি করে বায়ু চলাচল খাদ রাখতেই হবে নিরাপত্তার জন্য। তাই হাওড়া ময়দান এবং এসপ্ল্যানেডের মধ্যে দুটি সমান্তরাল টানেলের সংযোগকারী আটটি ক্রস-প্যাসেজ রয়েছে। হাওড়া ময়দান এবং হাওড়া স্টেশনের মধ্যে তিনটি এমন প্যাসেজ রাখা হয়েছে। তবে নদীর মাঝে এমন কোনো প্যাসেজ রাখা হয়নি। কটন সেই গর্তে জল ঢুকে সেটি মেট্রো চলাচলের ক্ষেত্রে অসুবিধার সৃষ্টি করতে পারে।