বাংলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সৌমিত্র খাঁ ও সুজাতা মন্ডলের দাম্পত্যের কেমেস্ট্রি রং বদলেছে সময়ে সময়ে। কখনো স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অদ্ভুত বন্ধন দেখেছে বাংলার মানুষ, আবার কখনো বিচ্ছেদের চরম পর্যায়ও গোপন থাকেনি। নির্বাচনী প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়েই সংসার ভেঙেছে দুজনের। আড়াই বছর ধরে তারা দুজন দুজনের থেকে আলাদা। আর এখন আইনত তারা আলাদা দুজনের থেকেই। ভোটের ময়দানে হাতে হাত রেখে লড়াই করলেও বর্তমানে এই রাজনৈতিক কাপল একে অপরের থেকে অনেকটাই দূরে।
একদিকে এই বিষয়ে যেমন জীবনে এগিয়ে যাওয়ার কথা শোনা গেছে বিজেপি সাংসদের মুখ থেকে, তেমনই আবার এই সম্পর্ক থেকে ‘মুভ-অন’ করে নতুন সম্পর্ক গড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন সুজাতা দেবী। তবে এসব নিয়ে এখন কেউই আলোচনা চায়না। কারণ এবার দুই প্রাক্তনের লড়াইটা হবে মুখোমুখি। তার কারণ হল আজ দুজনেই একই আসনের প্রার্থী। একদিকে যেমন জয়ী সাংসদ সৌমিত্র খাঁ’কে বিষ্ণুপুরের টিকিটে বহাল রেখে প্রার্থী করেছে পদ্ম শিবির, তেমনই রবিবার ব্রিগেডের সভা থেকে ওই একই আসনে সুজাতা মন্ডলকে টিকিট দেয় তৃণমূল। ফলস্বরূপ, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর কেন্দ্রে আমনে-সামনে সৌমিত্র-সুজাতা।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তৎকালীন স্বামী সৌমিত্র খাঁয়ের হয়র বিজেপির পতাকা হাতে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ভোট চেয়েছিলেন সুজাতা মন্ডল। সেবার স্ত্রীয়ের কর্মে স্বামীর জয় দেখেছিল বিষ্ণুপুর। তবে এবার তেমনটা হচ্ছে না। কিন্তু ছবিটা একই না থাকলেও এবার নিজের ও দলের জয় নিয়ে প্রবল আত্মবিশ্বাসী সুজাতা। তাই একদিকে যেমন টিকিট পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করছেন তিনি, তেমনই লড়াইয়ের বিষয়ে সুজাতা বলেন, “আমি তাঁর নাম উচ্চারণ করব না। কারণ, আমার তাতে রুচিতে বাধে। আমি শুধু একটাই কথা বলব, বিষ্ণুপুরের মানুষকে উনি যেভাবে ঠকিয়েছেন, দলের মানুষের পর্যন্ত পাশে থাকেননি। আজ আমি নিশ্চিত সেই মানুষটাকে বিষ্ণুপুরের আমজনতা ছুড়ে ফেলে দেবে।”
যদিও তৃণমূলের এই মাস্টারস্ট্রোক একদমই বিড়ম্বনায় ফেলছে না বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ’কে। কারণ প্রাক্তন স্ত্রীয়ের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াই লড়তে যে তিনি বিশেষ কিছু অনুভব করছেন না, তা তার বক্তব্যে স্পষ্ট। তাই এই ভোটে বিষ্ণুপুর কেন্দ্রে বিজেপির জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করে বিদায়ী সাংসদ বলেন, “বিষ্ণুপুর লোকসভায় যদি কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব দাঁড়াতেন, তাহলে রাজনৈতিকভাবে ভোট হত। একটা প্রতিযোগিতা হত। এলাকার উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হত। অতীতে অনেক রেকর্ডই তো ভেঙেছি। কিন্তু এবার আমার মনে হচ্ছে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যবধানে বিজেপি জিতবে।”