কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত ভারতীয় রেলের নেটওয়ার্ক। প্রায় প্রতিদিনই দেশজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ ট্রেনের মাধ্যমে পৌঁছে যান নির্দিষ্ট গন্তব্যে। আর এবার এই সুবিশাল রেল ব্যবস্থাকে সাজিয়ে তুলতে যেমন ট্রেনের গতি বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তেমনই ট্রেনের স্টেশনগুলিকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে অনন্য রূপে। রেলকে অন্য আঙ্গিকে দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে যেমন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো সেমি-হাইস্পিড ট্রেন চালু করা হয়েছে, তেমনই আবার ট্রেনের ট্র্যাকগুলিকে নবরূপে গঠন করা হচ্ছে কোনরূপ দুর্ঘটনা এড়াতে। টিকবে এর পাশাপাশি, দেশের স্টেশনগুলিকে সাজিয়ে তুলতে অমৃত ভারত স্কিম চালু হচ্ছে গোটা দেশে। ভারতীয় রেলের এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের সব স্টেশনকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে অন্যরূপে। অত্যাধুনিক পরিষেবা দেওয়ার পাশাপাশি যাত্রীদের সুবিধার্থে নানা ব্যবস্থা চালু হচ্ছে স্টেশনে স্টেশনে।
আর এবার আমাদের রাজ্যের ৬২ টি স্টেশনকেও সাজানো হবে নবরূপে। রেল সূত্রে জানা গেছে, বাংলার ৬২ টি স্টেশনকে অমৃত ভারত স্কিমের আওতায় রাখা হয়েছে। এর মধ্যে যেসব স্টেশন রয়েছে শহুরে এলাকায় সেখানে স্টেশনের মধ্যেই রেস্তোরাঁ, ক্যাফে এবং লাউঞ্জের মতো সুবিধা দেওয়া হবে। এই মর্মে, ইতিমধ্যে কাজ শুরু ককরে দিয়েছে পূর্ব রেল। এছাড়াও রাজ্যের যেসব স্টেশনে অবৈধভাবে জায়গা দখল করে দোকান বাজার বসানো হচ্ছে, সেগুলিকে উচ্ছেদ করতেও উদ্যোগী হয়েছে রেল।
এসবের মধ্যেই এবার সাজিয়ে তোলা হচ্ছে রাজ্যের দুটি গুরুত্বপূর্ণ জংশনকে। আমরা কথা বলছি সাঁতরাগাছি ও শালিমার স্টেশনকে নিয়ে। এই দুটি স্টেশনকে চালু করা হয়েছিল হাওড়া স্টেশনের বিকল্প হিসেবে। হাওড়া স্টেশন থেকে দূরপাল্লার ট্রেনের ভিড় কমাতে এই দুটি স্টেশন দিয়ে অনেক দূরপাল্লার ট্রেনের যাতায়াত ব্যবস্থা চালু করতে স্টেশনদুটিকে নতুন আঙ্গিকে সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু হয় আজ থেকে ছয় বছর আগে। সেই কাজ এখন শেষের মুখে। জানা গেছে, সাঁতরাগাছি স্টেশনের ৬ টি প্ল্যাটফর্মকে বাড়িয়ে ৮ টি করা হবে। একইসঙ্গে, শালিমার স্টেশনেও তিনটি প্ল্যাটফর্মকে বাড়িয়ে পাঁচটি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
তবে এই দুটি স্টেশনকে হাওড়া জংশনের বিকল্প হিসেবে ভাবা হলেও এই দুটি স্টেশনকে নিয়ে যাত্রীদের নানা অভিযোগ রয়েছে। একদিকে যেমন রাতের দিকে সাঁতরাগাছি স্টেশন থেকে যাতায়াত পরিষেবা নিয়ে নানা অভিযোগ সামনে এসেছে। অন্যদিকে রাত বাড়লে শালিমার স্টেশনের চারপাশ শুনশান হয়ে যায়। একইভাবে দুটি স্টেশনেই জল ও পর্যাপ্ত আলোর অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ করেন যাত্রীরা। একইভাবে শালিমার স্টেশন থেকে বেরোতে গেলে অনেকটা পথ হাঁটতে হয়। এতে বয়স্ক যাত্রীদের সমস্যা হয়। তবে এইসব সমস্যাকে মিটিয়ে দেওয়ার জন্য এবার উদ্যোগ নিয়েছে রেল।