বিগত কয়েকবছর ধরেই ডিএ বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। এর মাঝে এই মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলায় ২০২২ সালের ২০ মে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। এর মাঝে আবার হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করার নবান্নের বিরুদ্ধে আলাদা একটি মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে।
শহর কলকাতার বুকে বকেয়া DA-র দাবিতে সরকারি কর্মীদের আন্দোলন হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এমনকি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রদত্ত মহার্ঘভাতার হারে রাজ্য সরকারি কর্মীদের DA বৃদ্ধির দাবিতে দীর্ঘদিন লড়ছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের তিনটি সংগঠন। সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হবে আগামী মার্চ মাসেই। তবে এই মুহূর্তে দেশের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছে লোকসভা ভোট। এই সময়ে দাঁড়িয়ে রাজ্য বাজেটে ডিএ বাড়িয়েছে মমতা সরকার। ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৪ শতাংশ হয়েছে ডিএ-র পরিমান। কিন্তু এই বৃদ্ধিতেও খুশি নন আন্দোলনকারী কর্মীরা। কারণ, এখনো কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের কর্মীদের ডিএ-র ফারাক এখনো রয়েই গেছে।
এইসব কারণেই আন্দোলন জারি রাখার ঘোষণা করেছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। আগামী ৬ ও ৭ ই মার্চ ধর্মঘটের ঘোষণা করেছে এই সংগঠন। আর এই মর্মে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অন্যতম বড় মুখ ভাস্কর ঘোষ বলেন, “বিগত ১২ বছর ধরে এই সরকার আসার পর থেকে দুটো বেতন কমিশন হয়েছে। দুটো কমিশন বাবদ আমাদের বকেয়া পরিমাণ হয়েছে ৮২ শতাংশ। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার পে কমিশনের অধীনে কেন্দ্রীয় কর্মচারী এবং অন্যান্য রাজ্যের কর্মচারীরা ৪৬ শতাংশ হারে ডিএ অর্থাৎ মহার্ঘ ভাতা পান। কিন্তু আমাদের রাজ্যের ক্ষেত্রে সেই পরিমাণটা ১০ শতাংশ। নতুন করে যে ৪ শতাংশ ঘোষণা করা হয়েছে সেটা কিন্তু মে মাস থেকে দেওয়া হবে। কিন্তু এদিকে আবার খবর পাওয়া যাচ্ছে যে কেন্দ্রীয় সরকারও কিন্তু আরও ৪ শতাংশ মার্চ মাসেই ঘোষণা করতে চলেছে। তাহলে কিন্তু ব্যবধানটা ঠিক ৩৬ শতাংশে গিয়েই দাঁড়ালো।”
এই কারণেই মঞ্চ মনে করছে যে রাজ্য সরকারি কর্মীরা সরকারের এই কর্মকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই আন্দোলন জারি রাখার কথা ঘোষণা করেন ভাস্কর বাবু। তিনি এই মর্মে বলেন, “আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ বলতে এ মাসের ২২ তারিখ সব রাজ্য সরকারি দফতরে কর্মবিরতি পালন করা হবে। কর্মচারীরা কাজে যাবেন কিন্তু কাজ করবেন না। আগামী মাসে ৩ তারিখ আমাদের একটা মিছিল আছে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে রানী রাসমণি রোডে। সেখানে জমায়েত এবং সভাও হবে। আগামী মাসের ৬ এবং ৭ তারিখ গোটা রাজ্য জুড়ে আমরা ধর্মঘট ডাকতে চলেছি।”