দেশের কোটি কোটি মানুষ নির্ভরশীল ভারতীয় রেলের উপর। কারণ বর্তমানে দেশের কোণায় কোণায় ছড়িয়ে গিয়েছে রেল পরিষেবা, যা আরও বিস্তারের কাজ চলছে। তাই ভারতীয় রেলকে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম রেলওয়ে নেটওয়ার্ক-এর তকমা দেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গের রেলওয়ে নেটওয়ার্কের যে দুটি স্টেশনকে কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ধরা হয়, সেগুলি হল- হাওড়া জংশন ও শিয়ালদহ জংশন। তবর বর্তমানে এই দুটি জংশনের পাশাপাশি কলকাতা রেলওয়ে স্টেশনটিও গুরুত্ব পাচ্ছে ব্যাপকভাবে। তাই এবার এই স্টেশনকে আরো আকর্ষণীয় ও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে বিশেষভাবে আগ্রহী হয়েছে ভারতীয় রেল।
বর্তমানে যে জায়গাতে কলকাতা স্টেশনটি অবস্থিত, আগে এই জায়গাটি মালপত্র রাখার একটি বড় ফাঁকা জায়গা ছিল। বর্তমানে যেখানে গাড়ি ও বাস পার্কিং এলাকা এবং স্টেশনে পৌঁছানোর পথ হিসেবে দেখা যায়, কয়েক দশক আগেও সেখানে একটি কয়লা লোড করার জায়গা ছিল। তবে এটি স্টেশন ছিল আগেও। এই স্টেশনটি আগে চিৎপুর স্টেশন নামে পরিচিত ছিল। ২০০০ সালে, এই স্থানটিকে একটি রেলওয়ে স্টেশন হিসাবে ব্যবহার করার প্রথম পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। যেহেতু দূরপাল্লার যাত্রীদের সংখ্যার আধিক্য ঘটে শিয়ালদহ স্টেশনে এবং সেখসন নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরির জায়গার অভাব ছিল, সেই কারণেই কলকাতা স্টেশনের গুরুত্ব বাড়ে দিন দিন।
বর্তমানে কলকাতা রেল স্টেশন রাজ্যের এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। কারণ এখান থেকে যেমন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে যাতায়াতের জন্য দূরপাল্লার ট্রেন ছাড়ে, তেমনই আবার বাংলাদেশ যাওয়ার ট্রেনও কলকাতা থেকেই পাওয়া যায়। ঢাকা যাওয়ার মৈত্রী এক্সপ্রেস কলকাতা স্টেশন থেকেই ছাড়ে। সেই কারণে স্টেশনে ইতিপূর্বে অনেক অত্যাধুনিক পরিষেবা চালু হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল এক্সিকিউটিভ ওয়েটিং হল, ফিস পেডিকিওরের সুবিধা, লাউঞ্জ স্পা, ফুড কোর্ট স্ন্যাকস কাউন্টার, ওয়াইফাই ইন্টারনেট পরিষেবা, বাংলাদেশগামী ট্রেনের টিকিট কাটার বন্দোবস্ত, কাস্টম চেকিং ইত্যাদি।
তবে এবার কলকাতা স্টেশনকে আরো গুরুত্ব দিচ্ছে ভারতীয় রেল। সেই কারণেই অমৃত ভারত স্টেশনের আওতায় রাখা হয়েছে এই স্টেশনকে। আর এর মাধ্যমে আরো অনেক আন্তর্জাতিক মানের পরিষেবা দেওয়ার পাশাপাশি এই স্টেশন থেকে পণ্যের আদানপ্রদান বাড়ানো হবে বলে জানা গেছে। রেল আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন যে অদূর ভবিষ্যতে কলকাতা স্টেশন থেকে কাছাকাছি সব বাজারগুলিতে পণ্যের সরবরাহ বাড়ানো হবে। সেই কারণে একাধিক বাজার যেমন উপকৃত হবে, তেমনই সংলগ্ন এলাকায় বাড়বে ব্যবসা। এর ফলে বাংলাও অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।