প্রতি সপ্তাহের ছয়দিন কর্মদিবস হিসেবে গণ্য হয়। সপ্তাহে একদিন সাপ্তাহিক ছুটি পেয়ে থাকেন সরকারি থেকে বেসরকারি সকল ধরণের কর্মীরা। কোথাও কোথাও আবার এই সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন থাকে। এছাড়াও সরকারি কর্মচারীরা সরকারের ছুটির ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আরো বেশ কিছু অতিরিক্ত ছুটি পেয়ে থাকেন। তার মধ্যে বেশ কিছু থাকে কেন্দ্রীয় সরকারি ছুটি, আবার রাজ্যের বেশ কিছু বিশেষ দিনে ছুটি পেয়ে থাকেন সরকারি কর্মচারীরা। আর এভাবেই নিত্যদিনের কাজকর্ম থেকে কিছুটা বিরতি পেয়ে থাকেন সমস্ত ধর্মের কর্মীরা। বলা যায়, পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই এমন ছুটির ব্যবস্থা চালু রয়েছে।
তবে এবার কর্মীদের ছুটি নিয়ে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হল উত্তর ইউরোপের এমন একটি দেশে, যে দেশ বর্তমানে চরম অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে। অথচ তারাই কয়েকবছর আগে পৃথিবীর মানচিত্রে অন্যতম ‘বিজনেস টাইকুন’ হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু ক্রমেই অর্থনৈতিক মন্দা দেশটিকে গ্রাস করেছে। আর এর প্রভাব পড়েছে সমস্ত স্তরের মানুষের উপর। তবর এই অবস্থায় ভেঙে না পড়ে এই মন্দার কারণ খুঁজে বের করে তার অভিনব সমাধানের উপায় খুঁজতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে দেশ। কোন দেশে, কি ব্যবস্থা চালু হয়েছে? সেটাই এবার জেনে নিন।
নিবন্ধের পূর্ববর্তী অংশে আমরা কথা বলছিলাম জার্মানি দেশটিকে নিয়ে। এই দেশ পৃথিবীর অন্যতম টেকনোলজি হাব বলে পরিচিত। আজও জার্মানিতে তৈরি বিভিন্ন যন্ত্রের উপর ভরসা করে সেদেশের বাইরের মানুষও। সেই কারণেই সেই দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ ছিল বিপুল। অনেক ভারতীয় এখন এই দেশে প্রবাসী হয়ে কর্মরত রয়েছেন। আর এবার এই সমস্ত কর্মীদের সুবিধার্থে সপ্তাহে ৪ দিনের কর্মদিবস করতে চলেছে জার্মানি। জানা গেছে, এবার থেকে প্রতি সপ্তাহে তিন দিন ছুটি পাবেন কর্মীরা। গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে এই ছুটির বদল ঘটানো হয়েছে। জানা গেছে, জার্মানির ৪৫ টি সংস্থা এই ব্যবস্থাকে লাগু করেছে কর্মীদের ক্ষেত্রে।
কিন্তু কেন এই পরিবর্তন? এর পিছনে রয়েছে সেদেশের অর্থনৈতিক মন্দা। আন্তর্জাতিক মাধ্যমে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে দেখা গেছে সেই দেশের কর্মীদের শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতার কারণে ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি লোকসান হয়েছে একাধিক সংস্থায়। আর এই সমস্যার কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা গেছে যে বেশি সময় ধরে কাজ করার ফলে কর্মীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছে। এর ফলে উৎপাদন কমেছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। সেই কারণেই সপ্তাহে তিনদিন ছুটি দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জার্মানিতে। যাতে করে সপ্তাহের ৪ টি কর্মদিবসে কর্মীরা তাদের সেরা কাজ করে দিতে পারেন।