আমার এই পৃথিবী শুরু থেকেই বৈচিত্র্যময়। আমাদের জন্মের আগের সময়ের বৈচিত্র্য আমরা খুঁজে পাই আগেকার মানুষের লিখে যাওয়া নানা বই ও পুঁথিতে। আগেই যেমন আমাদের এই পৃথিবীর বুকে ঘটে যেত কত ঘটনা, তেমন আজো পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে কত না কিছু ঘটে যাচ্ছে। কত আজব ঘটনা, তার কোনো হিসেবে নেই। নানা মজার গল্প, বিস্ময় কাহিনি লুকিয়ে রয়েছে পরত পরতে। কত রীতি-নীতি, যা মানুষকে ভাবিয়ে তোলে। কত কিছু আবার আমাদের অবাক করে তোলে। আর এই কারণেই তো এই বৈচিত্র্যময় পৃথিবী ছেড়ে যেতে চায়না মানুষ।
তবে পৃথিবীকে না দেখার সুযোগ হয় আমাদের ভারতকে দেখলেই নানা বৈচিত্র চোখে পড়ে। ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির দেশ ভারত। তার প্রমান মেলে আমাদের জাতীয় সংগীতেই। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘জন গণ মন’ গানটির মধ্যে রয়েছে ভারতের এই বৈচিত্রের বর্ণনা। কিন্তু এই জাতীয় সংগীতকে ঘিরে এমন এক ব্যবস্থা চালু রয়েছে আমাদের দেশের একটি শহরে, যা হয়তো অনেকেই জানেন না। ইদানিং সামাজিক মাধ্যমের দৌলতে এই খবরটি চাউর হয়েছে গোটা দেশে। এই খবর শুনলে হয়তো আপনিও চমকে উঠবেন। খবরটি তাহলে কি? সেটাই এবার জেনে নিন।
দক্ষিণ ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের বুকে নালগন্ডা নামের একটি শহর রয়েছে। তেমন কিছু বিচিত্র জিনিস নেই এই শহরে।তবে শহরে এমন এক রীতি চালু রয়েছে, যা ভূ-ভারতের আরো কোথাও নেই। আর সেটি হল প্রতিদিন নিয়ম করে জাতীয় সংগীত গাওয়ার রীতি। মূলত আমরা প্রজাতন্ত্র দিবসের সিন বা স্বাধীনতা দিবসের দিন কিংবা কোনো বিপ্লবীর স্মরণে কোনো অনুষ্ঠানে কিংবা কোনো জাতীয় অনুষ্ঠানের শেষে জাতীয় সংগীত গেয়ে থাকি। তবে এই শহরের প্রতিটি মানুষ প্রতিটি দিন জাতীয় সংগীতকে গেয়ে থাকেন। সেই কারণেই প্রতিদিন ৫২ সেকেন্ডের জন্য শহরের জনজীবন স্তব্ধ হয়ে যায় এই শহরে।
সূত্রের খবর, শহরের আনাচে কানাচে এই কারণে লাগানো রয়েছে ১৪ টি লাউডস্পিকার। সেই স্পিকারেই প্রতিদিন নিয়ম করে বাজানো হয় দেশের জাতীয় সংগীত। আর যখন সেটি হয়, তখন শহরের বুকে যে যেখানে থাকেন, সেখানেই দাঁড়িয়ে পড়ে এই জাতীয় গানে গলা মেলাতে শুরু করেন। এমনকি অনেকেই এই সময়ে হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে বাইরে বেরিয়ে পড়েন। প্রথম ২০২১ সালে এই রীতি চালু হয় শহরে। তারপর রীতি এখন ছড়িয়ে পড়েছে গোটা নালগোন্ডা শহরেই। সেই কারণেই প্রতিদিন নিয়ম করে ৫২ সেকেন্ডের জন্য থমকে যান এই শহরের প্রতিটি মানুষ।