কেন্দ্রীয় প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বিগত কয়েকমাস ধরেই রাজ্যকে খোঁচা দিচ্ছে বিরোধীরা। বিশেষ করে বিজেপির তরফে রাজ্যের বিরুদ্ধে বারবার এই অভিযোগ তোলা হয়েছে। এর মধ্যে যেমন রাজ্যে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে, তেমনই আবার কেন্দ্রীয় আবাস যোজনা নিয়েই তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলেছে বিজেপি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এইসব দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে রাজ্যের শাসক দলের নানা স্তরে দুর্নীতি ও বেনিয়মের অভিযোগ করেন। এই নিয়ে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। এদিকে কেন্দ্রের থেকে বকেয়া টাকার দাবিতে তৃণমূলের ধর্ণা প্রসঙ্গ নিয়েই কাটাছেঁড়া করেছে বিজেপি।
আর এই অবস্থার মাঝেই এক চমকে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘিতে গেল রাজ্যের বুকে। এবার ঘটনাস্থল পশ্চিম বর্ধমান জেলার শিল্প শহর দুর্গাপুর। এবার দুর্গাপুরের বুকে একটি ফাঁকা মাঠ থেকে উদ্ধার হল কাঁড়ি কাঁড়ি নথি ও এটিএম কার্ড। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনার বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের পাসবুকও উদ্ধার হয় ফাঁকা মাঠ থেকে। স্থানীয়রা সকালে বাজারে বেরিয়ে মাঠের মধ্যে এইসব কাগজপত্র দেখতে পান। তারপরেই ভিড় জমে এলাকায়। শেষমেষ পুলিশ এসে সেগুলিকে উদ্ধার করে।
ঘটনাটি ঘটে দুর্গাপুর পুরসভার ২৯ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত সগরভাঙ্গা হাউসিং কলোনি এলাকায়। এই এলাকা কোকওভেনে থানার মধ্যে পড়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে এলাকাবাসী প্রথমে এইসব নথিগুলিকে দেখতে পায়। তারপর শোরগো পড়ে এলাকায়। কৌতূহলী মানুষ ভিড় জমায় সেখানে। এরপর থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে সেগুলিকে উদ্ধার করে। জানা গেছে, উদ্ধারকৃত জিনিসের মধ্যে ছিল শতখানেক এটিএম কার্ড, যেগুলির বৈধতা রয়েছে ২০২৪ সাল অবধি। একইসঙ্গে স্থানীয় কিছু এলাকাবাসীর প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনার বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের পাসবইও পাওয়া যায়।
আর এই ঘটনাকে ঘিরে ফের একবার কেন্দ্রীয় প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে রাজ্যজুড়ে। এই বিষয়ে বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, ‘সাধারণ মানুষ প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনার অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। কিন্তু সেই অ্যাকাউন্টের পাস বইগুলি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছয়নি। বাংলায় সমস্ত দফতরেই দুর্নীতি দেখা যাচ্ছে৷” এদিকে পালটা বিজেপিকে কটাক্ষ করে দুর্গাপুরের তিন নম্বর ব্লকের তৃণমূলের সহ-সভাপতি আশিস কেশ বলেন, “মাঠের পাশে পাসবই আর এটিএম কার্ড পড়ে আছে এলাকার মানুষের খবর পাওয়ার আগেই বিজেপির নেতারা খবর পেয়ে যাচ্ছে। এই পাসবই আর এটিএম কার্ড পড়ে থাকার পিছনে বিজেপির যোগসাজশ রয়েছে। সামনে লোকসভা নির্বাচন। সেই জন্যই মানুষের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়ানোর চেষ্টা করছে বিজেপি৷”