বৃহস্পতিবার বিধানসভায় রাজ্য বাজেট পেশ করেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। লোকসভা ভোটের আগেই যেহেতু এই বাজেট পেশ করা হয়েছে, তাই এই বাজেটে বেশ কিছু জনমুখী ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। এই বাজেটে যেমন বাড়ানো হয়েছে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা, তেমনই একাধিক নতুন প্রকল্পের ঘোষণাও হয়েছে। তবে এই বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের কথাও ভাবা হয়েছে রাজ্যের তরফে। সরকারি কর্মীদের মন জয় করতে ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করেছে রাজ্য। প্রত্যাশিত হারে এই বৃদ্ধি না হলেও বৃদ্ধি ঘটেছে, যা এককথায় সুখবর।
রাজ্য বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৪ শতাংশ হারে ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা হয়েছে। ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আওতায় এই বৃদ্ধি ঘটবে বলে জানা গেছে। বাজেটের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী মে মাস থেকে এই বর্ধিত হারে ডিএ পাবেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। কিন্তু এই বৃদ্ধিতেও কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের কর্মচারীদের ফারাক রয়ে গেছে অনেকটাই। একদিকে যেমন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা বর্তমানে ৪৬ শতাংশ হারে ডিএ পাচ্ছেন, যা আবার ৪ শতাংশ বেড়ে ৫০ শতাংশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেখানে রাজ্যের কর্মীরা কেন্দ্রের কর্মীদের তুলনায় ৩০ শতাংশের থেকেও কম ডিএ পাচ্ছেন।
তবে এই বিষয়টি নিয়ে এবার সরব হয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের সংগঠন। শুক্রবার, তারা প্রতীকী অনশন শুরু করে রাজ্যের এই বঞ্চনার জন্য। এছাড়াও, আগামী ২২ শে ফেব্রুয়ারি ধর্মঘটের ডাক দেন তারা। এই মর্মে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে বলা হয়েছে, “৮ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের বাজেটে যথারীতি নীতিহীন, হিসাবহীনভাবে আরও চার শতাংশ মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করা হয়েছে। এই চার শতাংশ মহার্ঘ ভাতা কোনও বছরের, কোন পর্যায়ের মূল্যবৃদ্ধির ক্ষতিপূরণ?” একইসঙ্গে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে বলা হয়, “মহার্ঘ ভাতার নামে সরকারের এই ভিক্ষাকে আমরা ধিক্কার জানাচ্ছি।”
কিন্তু ২২ শে ফেব্রুয়ারি ধর্মঘট হলে একাধিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ সেই সময়ে চলবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষার রুটিন থেকে দেখা যাচ্ছে যে ঐ কর্মদিবসে উচ্চমাধ্যমিকের একাধিক বিষয়ের পরীক্ষা রয়েছে। জানা গেছে, আগামী ২২ শে ফেব্রুয়ারি কম্পিউটার সায়েন্স, মর্ডান কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন, এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ, হেলথ অ্যান্ড ফিজিক্যাল এডুকেশন, মিউজিক, ভিস্যুয়াল আর্টস বিষয়ের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা রয়েছে। তবে তার উপর এই ধর্মঘটের প্রভাব কতটা পড়বে, তা এখনো সঠিকভাবে জানা যায়নি।