বিগত কয়েকমাস ধরেই গভীর আর্থিক সংকটে ঘিরে রয়েছে পাকিস্তান। একের পর এক দুরবস্থা যেন পিছু ছাড়ছে না ভারতের প্রতিবেশী এই দেশের। কয়েকমাস আগেই পাকিস্তানকে বড় ধাক্কা দিয়েছে আইএমএফ। গত বছর পাকিস্তানকে দেওয়া ১.১ বিলিয়ন ডলারের কিস্তি বন্ধ করে দিয়েছে আইএমএফ। তখন জানা গিয়েছিল, বেলআউট প্যাকেজ নিয়ে পাকিস্তান ও আইএমএফের মধ্যে আলোচনা হয়নি। সেই কারণে আইএমএফ-এর ধারণা, পাকিস্তান ক্রমাগত ঋণখেলাপির দিকে এগোচ্ছে। এরই মধ্যে আইএমএফ সহ অন্যান্য দেশও পাকিস্তানের সঙ্গ ছেড়ে দিয়েছে।
অন্যদিকে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ক্রমাগত কমছে। ফলে এ যেন শিরে-সংক্রান্তি অবস্থা হয়েছে এই দেশের। জানা গেছে, ২০২৩ সালের জুলাইয়ে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৮.১ বিলিয়ন ডলার। আবার ২০২৩ সালের নভেম্বরে সেই সংখ্যাটা কমে দাঁড়ায় ৭.১ বিলিয়ন ডলার। এর ফলে সে দেশের মুদ্রাস্ফীতি যেন চড়চড়িয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এর ফলস্বরূপ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ। একের পর এক নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির নাগপাশে আবদ্ধ হচ্ছে সে দেশের জনগণ।
ইতিমধ্যে, পাকিস্তানে ডিমের দাম হয়েছে আকাশছোঁয়া। সূত্রের খবর, পাকিস্তানে এক ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪০০ পাকিস্তানি রুপিতে। আর ডিমের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে চরম খাদ্য সংকটে পড়েছে গোটা দেশ। একইসঙ্গে, সেদেশে বেড়েছে চিকেনের দামও। এই মুহূর্তে লাহোরে এক কেজি মুরগি মিলছে ৬১৫ পাকিস্তানি রুপিতে। এ ছাড়া দুধের দামও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে গোটা দেশে। সূত্রের খবর, পাকিস্তানে প্রতি লিটার দুধ বিক্রি হচ্ছে ২১৩ পাকিস্তানি রুপিতে। ফলস্বরূপ, নিত্যদিনের খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
তবে শুধুমাত্র ডিম, মাংস বা দুধের দাম নয়, একইভাবে দাম বেড়েছে নানা সবজি ও পেঁয়াজের। পাকিস্তানে গত সপ্তাহে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২৫০ পাকিস্তানি রুপি দরে। যদিও তারপর সরকার কিছুটা ভর্তুকি দিতে কেজিপ্রতি দাম হয়েছে ১৭৫ পাকিস্তানি রুপি। এছাড়াও সে দেশে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২০০ পাকিস্তানি রুপি কেজি দরে এবং চাল বিক্রি হচ্ছে ৩২৮ পাকিস্তানি রুপি প্রতি কেজি দরে। এর ফলে, সেই দেশের সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে ভীষণভাবে, তা মোটামুটি পরিষ্কার।